চিত্ত যেথা ভয়শূন্য শাহ এ এম এস কিবরিয়া ISBN 984 05 0273 5 2004 292pp HB 215x136mm Tk.225.00
চিত্ত যেথা ভয়শূন্য গ্রন্থটি লেখকের সম্পাদনায় প্রকাশিত সাপ্তাহিক মৃদুভাষণে তার নিয়মিত কলামেরই সংকলিত রূপ। চাকরিসূত্রে দীর্ঘ সময়ের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, দীর্ঘ এক যুগের সক্রিয় রাজনৈতিক তৎপরতা, পাঁচ বছরের মন্ত্রীত্ব এবং দুই বছরব্যাপী বিরোধীদলীয় এমপিত্ব - এ সবই লেখকের জীবনকে করে তুলেছে বর্ণবৈচিত্র্যময়। উপরন্তু তার রয়েছে ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করার এক চমৎকার দৃষ্টিভঙ্গি। সহজাত বিবেচনাবোধ এবং অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে তিনি যা দেখেছেন, উপলব্ধি করেছে, তা-ই পুলে ধরেছেন তার লেখায়।
সমকালীন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনাবলীর যে বিকাশ ঘটেছে, তার সুগভীর বিশ্লেষণ পাঠককে সহজেই আকৃষ্ট করবে। লেখকের ভাষা প্রাঞ্জল, বলার ঢং সাবলীল। ঘটনাসমূহের জটিলতা এবং অর্থনীতির নীরস, আপাত-দুর্বোধ্য বিষয়গলোকেও তিনি সরস করে উপস্থাপন করেছেন। ফলে বইটি চিন্তাশীল এবং সাধারণ - উভয় শ্রেনীর কাছেই পাঠকপ্রিয়তা পাবে বলে বিশ্বাস।
শাহ এ এম এস কিবরিয়া ১৯৫২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্মানসহ ১৯৫৩ সনে একই বিষয়ে এম.এ. ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৫৪ সনে তদানীন্তন পাকিস্তান সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিসেস পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে পাকিস্তান পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৫৭ সাল থেকে কোলকাতা, কায়রো, নিউ ইয়র্ক, তেহরান, জাকার্তা, ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন এবং ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশন প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে জনমত গঠনে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সনে স্বাধীন বাংলাদেশে নবগঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক (রাজনৈতিক বিষয়ক) হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭২ সনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজিতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার, জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন। ৭৭ জাতি গ্রুপের ও নৌপরিবহন সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। জনাব কিবরিয়া ১৯৭৮ সনে পররাষ্ট্র সচিব এবং ১৯৮১ সনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সংক্রান্ত জাতিসংঘ কমিশন (এসকাপ)-এর নির্বাহী সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত তিনি ক্যাম্বোডিয়ায় মানবিক সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত কার্যক্রমের পরিচালনা ও সমন্বয়ের বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯২ সালে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে এসে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখতে শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি সেই সরকারের অর্থমন্ত্রী নিযুক্ত হন এবং সাফল্যের সঙ্গে দেশের অর্থনীতি পরিচালনা করেন। মন্ত্রী থাকাকালে তিনি ১৯৯৭ সালে ইকনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, ১৯৯৮ সালে নির্বাচিত হন ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের গভর্নিং কাউন্সিলের সভাপতি। ২০০১ সালে তিনি হবিগঞ্জ-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০২ সালের এপ্রিল পাস থেকে তিনি মৃদুভাষণ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
ইউপিএল থেকে প্রকাশিত এই লেখকের অন্যান্য গ্রন্থ: মৃদুভাষণ, দ্য ইমার্জিং ওয়ার্ল্ড অর্ডার এবং বাংলাদেশ অ্যাট দ্য ক্রস রোডস পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে।
|